জবি প্রিতিনিধি: অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর শিক্ষকদের যাচ্ছেতাই নিয়মের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইউানট-১ (বিজ্ঞান শাখা) এর ভর্তি পরিক্ষা। পরীক্ষা চলাকালিন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও প্রানীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাকি দ্বারা সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়া ও হেনস্তা করার ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার জবির বিজ্ঞান শাখার ভর্তি পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে ১১.৩০টা ১ম শিফটে জোড় সংখ্যার রোল এবং বিকাল ৩টা থেকে ৪.৩০টা পর্যন্ত ২য় শিফটে বিজোড় সংখ্যার রোল নম্বরধারী পরীক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সকালের শিফটের পরীক্ষায় সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলেও বিকালের শিফটে শিক্ষকদের যাচ্ছেতাই নিয়মের মাধ্যমে শেষ হয়।
প্রসঙ্গত, বিকালের শিফটে পরীক্ষার্থীরা পুরান ঢাকার জ্যামের কারনে দেরীতে উপস্থিত হলে প্রক্টরিয়াল বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হলে প্রবেশের নির্দেশনা থাকলেও তোয়াক্কা করেনি আইন বিভাগের শিক্ষকরা। আইন বিভাগের ৯১০ ও ৯১৫ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট পর দুই পরীক্ষার্থী সাদমান ইসলাম ও নাইমুল ইসলামকে প্রক্টর থেকে অনুমতি নিয়ে আসাতেও তাদের পরিক্ষার হলে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
অন্যদিকে পরীক্ষা শুরুর ৪০ মিনিটি পর্যন্ত অন্যান্য কক্ষে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে। এসময় ওই দুই পরীক্ষার্থীর সাথে কথা বলতে গেলে ‘দ্য এশিয়ান এইজ’ এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মিনার আল হাসানের মোবাইল কেড়ে নেওয়া ও মানসিকভাবে হেনস্তা করা হয় এবং ‘সাংবাদিকরা সবাই বেয়াদব’ বলে মন্তব্য করেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও প্রানীবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাকি। এরপর প্রক্টর অফিসে সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে গেলে সহকারী প্রক্টর বিভাস কুমার সরকার সাংবাদিকদের সাথে রুঢ় ব্যবহার করেন।
এছাড়াও সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পরীক্ষা কেন্দ্রে একটি বেঞ্চে তিনজন করে পরিক্ষার্থী বসানো হয়েছে। এমনকি তাদের প্রত্যেকের প্রশ্নের সেট একই। তাছাড়া কলা ভবনের কিছু সংখ্যক শিক্ষক পরীক্ষা চালাকালীন হল থেকে বের হয় একসাথে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। যার ফলে তারা একে অপরের খাতা দেখার সুযোগ পাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট-৩ (বাণিজ্য) এর ভর্তি পরীক্ষা চলার সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্বামীকে পরীক্ষার হলের মধ্যে সেলফী তুুলতে দেখা যায়। পরীক্ষা চলাকালীন এ সেলফী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে নিন্দার ঝড় উঠে।
এবিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টও ড. মোস্তফা কামাল বলেন, রাস্তায় যানজট থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের পর পরীক্ষার্থীদের হলে ঢুকতে দেয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু কোন হলে ঢুকতে দিবে আবার কোন হলে ঢুকতে দিবে না এরকম হওয়াটা দুঃখজনক। সাংবাদিক লাঞ্ছনার বিষয়ে তিনি উক্ত শিক্ষকের সাথে কথা বলবেন বলে জানান।
উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, জ্যামের বিষয়ে জানার পর মানবিক দিক বিবেচনায় নির্দিষ্ট সময়ের পর পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশনা ছিল। তারপরও কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে থাকলে এখন আর কিছু করার নাই।
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ