নিউজ ডেস্ক: খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভায় দেশের খাদ্য পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এ কমিটির আট মন্ত্রীর মধ্যে ছয়জনই অনুপস্থিত থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমসি) সভা হয়। এ কমিটির সভাপতি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সদস্য হিসেবে রয়েছেন কৃষিমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিবও এ কমিটির সদস্য। এছাড়া ৯ সচিব এ কমিটির সদস্য।
সভা শেষে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় পাশে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সহযোগিতা খুব দরকার। কৃষি খুবই সংকটে আছে, মিডিয়ার সহযোগিতা দরকার। আমি আপনাদের বলছি, অর্থমন্ত্রী আজ মিটিংয়ে আসেননি। কেন আসবেন না অর্থমন্ত্রী মিটিংয়ে?’ কণ্ঠে ক্ষোভ ঝরে কৃষিমন্ত্রীর।
খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্য দেয়ার মধ্যেই পাশে বসা কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলছিলেন। কিছুক্ষণ পর খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্যেই কৃষিমন্ত্রী আবারও উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, (অর্থমন্ত্রী না থাকায়) আমি খুবই অবাক!
গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হওয়ার পরও অর্থমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীরা কেন আসেননি জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ওনাদের আরও জরুরি মিটিং আছে, কারো বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন আছে। আরো অন্য মিটিং আছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিংয়ে দেখলাম।
সাধন চন্দ্র আরও বলেন, মিটিংয়ের নোটিশটা অনেক দিন আগে দেয়া হয়েছে। এটার ওপর প্রাধান্য দেয়া উচিত ছিল। আমার মনে হয় ওনারা মিটিংয়ের গুরুত্ব খুব একটা অনুধাবন করতে পারেননি। সারা দেশের মানুষের খাদ্যের বিষয়। সব সচিবরা ছিলেন। হয়তো এর পর সবাই আসবেন। গুরুত্ব হয়তো এর মধ্যে বুঝে ফেলেছেন। পাশে থেকে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘৪০ ভাগ মানুষের জীবিকার বিষয় এটি (কৃষি)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন কিনা জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, না ছিলেন না, প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রামে ছিলেন, ওনার প্রতিনিধি ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, এটি ছিল খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির দ্বিতীয় মিটিং। এর আগের মিটিংয়ের সময় অর্থমন্ত্রী অসুস্থ, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছিলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আগে মুহিত সাহেব (সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত) ছিলেন, আমি খাদ্যমন্ত্রী ছিলাম, আমার মনে আছে- মুহিত সাহেব একটা মিটিংও মিস করেননি।
খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি সার্বিক খাদ্য পরিস্থিতির ওপর নিয়মিত নজর রাখবে। কমিটি খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিসংখ্যান, খাদ্যশস্যের চাহিদা নিরূপণ, খাদ্যশস্যের মজুত, সামগ্রিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং খাদ্য সম্পর্কিত অন্য বিষয় পর্যালোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরকারকে পরামর্শ দেবে। পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধানে বাস্তব পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সরকারকে প্রয়োজন মতো পরামর্শ দেবে।
উল্লেখ্য, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট (এফপিএমইউ) কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিয়ে থাকে।
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ