ঢাকা, নজরুল প্রতিনিধি: কবি নজরুল সরকারি কলেজে হাজার শিক্ষার্থীদের জন্য নেই ক্যান্টিন। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তারা। ফলে বাধ্য হয়ে নিম্নমানের খাবার খাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
ক্লাস চলাকালীন দিনের অধিকাংশ সময় ক্যাম্পাসে থাকে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের নাস্তা বা দুপুরের খাবারের জন্য কোন ক্যান্টিন নেই কলেজে। সকল শিক্ষার্থী কলেজের বাইরের নিম্নমানের রেস্তোরা, ফুটপাতে ভ্রাম্যমান দোকানের ফুচকা, সিঙ্গারা, সমুচা খেয়ে বিরতির পরের ক্লাসগুলো করছেন।
উল্লেখ্য, ১৪৫ বছরের ইতিহাসের সাক্ষী ঢাকার ব্যস্ততম এই ক্যাম্পাস। এখানে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। যা হাজী মুহাম্মাদ মহসীন ফান্ডের আর্থিক সহায়তায় ১৮৭৪ সালে যাত্রা শুরু করে।
প্রসঙ্গত, এখানে অনার্স এর পাশাপাশি ইন্টারমিডিয়েটও চালু রয়েছে। অনার্স এর ছেলেমেয়েদের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি থাকলেও ইন্টারমিডিয়েট এর শিক্ষার্থীদের জন্য তা একেবারেই হারাম।
ইন্টারমিডিয়েটর ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ জানায়, আমাদের সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্যাম্পাসের ভেতরেই থাকতে হয়। আমার পরিবার গ্রামে থাকে, ঢাকায় আমি একা। কলেজে আসার সময় কে খাবার বানিয়ে দেবে? কলেজে একটা ক্যান্টিন খুবই প্রয়োজন।
অন্যদিকে, কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাস শহীদ শামসুল আলম হল এ খাবারের তেমন সুব্যবস্থা নেই। নেই পর্যাপ্ত লাইট-ফ্যান। তাই আবাসিক শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়েই হলের আশেপাশের বিভিন্ন রেস্তোরায় চড়া দামে খাবার খেতে বাধ্য হচ্ছেন।
ক্যাম্পাসে ক্যান্টিনের চরম দুর্ভোগ প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে বার বার সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে এর কোনো প্রতিকার নেই।
ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ বলেন, ক্লাস শেষে দুপুরবেলা সিঙ্গারা, সমুচা খেতে মোটেই ভালো লাগে না। কিন্তু কী আর করার! কলেজে তো ক্যান্টিন নেই, তাই বাধ্য হয়ে এসব খাবার খেতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষক জানান, ইন্টারমিডিয়েট এর শিক্ষার্থীদের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দিলে তারা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে চলে যায়। তাই ক্লাস চলাকালীন সময়ে তাদের কলেজের বাইরে বের হওয়া নিষেধ। কলেজে ক্যান্টিন থাকলে শুধু শিক্ষার্থীরা নয়, শিক্ষকরাও উপকৃত হবে। আমাদেরও মাঝে মাঝে বাধ্য হয়ে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার কথা বিবেচনায় এনে দ্রুত একটি ক্যান্টিনের ব্যবস্থা করা উচিত।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার জানান, আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ক্যান্টিনের বিষয়ে দ্রুত সিধান্ত নেয়া হবে বলে আশ্বাস দেন।
সময় জার্নাল/ শেখ ফারহান আহমেদ
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ