আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের গুজরাট রাজ্যের সুরাটের একটি কোচিং সেন্টারে ভয়াবহ আগুন লাগলে বহু শিক্ষার্থী প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপ দিয়েছে ছাদ থেকে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জন শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে সংবাদসংস্থা পিটিআই।
পিটিআই জানায়, সুরাটের তক্ষশীলা কমপ্লেক্স নামের ভবনের উপরের তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আগুন লাগে। তবে আগুন লাগার কার এখনও জানা যায়নি। ঘন ধোঁয়ায় এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছে।
এদিকে বিল্ডিং এর তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকে শিক্ষার্থীদের ঝাঁপ দেওয়ার ভিডিও ফুটেজ দেখা গেছে টেলিভিশন চ্যানেলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৯ টি দমকল ইঞ্জিন ও দুটি হাইড্রোলিক প্লাটফর্ম ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ করে। নিহত অধিকাংশ ছাত্রেরই বয়স ১৪ থেকে ১৭-র মধ্যে।
স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার কার্যে সাহায্য করছেন। এক আধিকারিক জানান, ১৯টি দমকল ইঞ্জিন এবং দু’টি হাইড্রোলিক প্ল্যাটফর্ম পাঠানো হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এক ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী বলেন, ‘‘চার ও পাঁচ তলার ছাত্ররা নিজেদের বাঁচাতে নীচে লাফ দিয়েছে। অনেককেই উদ্ধার করে হাসপাতালে পাটানো হয়েছে। আগুন নেভানোর কাজ চলছে।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে বলেছেন, ‘‘সুরাটের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত দুঃখিত। শোকগ্রস্ত পরিবারগুলিকে আমার সহানুভূতি জানাই। আহতরা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। গুজরাত সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সমস্ত প্রয়োজনীয় সহায়তা করতে বলা হয়েছে।”
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি জানিয়েছেন, ‘‘সুরাতের অগ্নিকাণ্ডে গভীর শোকগ্রস্ত। আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত আক্রান্তদের জন্য প্রার্থনা করছি। যারা আহত হয়েছে, তারা যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। মৃতদের আত্মাদের জন্য আমি প্রার্থনা করি। ওম শান্তি।”
এদিকে দুর্ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
মূলত: অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অবহেলার কারণেই বিপজ্জনক হারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, শেষ যে বছরটির হিসেব পাওয়া যাচ্ছে, সেই ২০১৫ সালে ভারত জুড়ে ১৭ হাজারের বেশি মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন। দেশটিতে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর অন্যতম কারণ এটি।
সজা/এমএম
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ