ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে নমুনা সংগ্রহের পর তিনি একথা জানান।
ছাত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের এই সদস্য সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় এক না একাধিক ব্যক্তি জড়িত তা নিশ্চিতে ওই ছাত্রীর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম নাসির উদ্দিন।
ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, মেয়েটির গলা, হাত, গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন আছে। কিছু আঘাত হয়েছে ধর্ষণকারীর দ্বারা, আর কিছু হয়েছে ঘটনাস্থলের কারণে। জঙ্গলের কারণে তার পায়ে কিছু আঘাত হয়েছে। তার গলায় আমরা ধর্ষণকারীর হাতের চিহ্ন পেয়েছি। বোঝা গেছে যে ধর্ষণকারী তার গলা টিপে ধরেছিল। হাতেও একই ধরনের চিহ্ন আছে যেটা থেকে অনুমিত হচ্ছে যে তাকে জোর করে আঘাত করা হয়েছে। লাথি মারা হয়েছে এরকম আঘাতের চিহ্নও পেয়েছি শরীরে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীকে খুঁজে বের করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, আমরা ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্তের চেষ্টা করছি। এর জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। অপরাধীকে খুঁজে বের করার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আলামত হিসেবে ভিকটিমের বস্ত্র পাওয়া গেছে, একটি ঘড়ি, দুটি ইনহেলার, একজোড়া জুতা, বইসহ আরো কিছু আলামত সিআইডি সংগ্রহ করেছে। তারা পরীক্ষা করার পর বিস্তারিত বলা যাবে। তা ছাড়া ভিকটিমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে অভিযুক্ত একজনই ছিল।
উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাবির নিজস্ব বাসে রওনা দেন ওই ছাত্রী। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে নামেন। এরপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে নির্যাতনও করা হয়।
ধর্ষণের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি নিয়ে ঢামেকে আসেন। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা।
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ