সময় জার্নাল প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চার দফা দাবি পূরণে ৭ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ডাকসু ভিপি নুরুল হক ও তার সহযোগিদের উপর হামলার বিচার এবং তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ চার দাবিতে উপাচার্য বরাবার স্মারকলিপি দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
এসময় ঢাবি প্রশাসনকে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে বৃহৎ কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেয় ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলো নিয়ে নব গঠিত সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য ফোরাম।
এদিকে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে সহকারী প্রক্টর আব্দুর রহিম ও নারী প্রক্টর সিমা ইসলাম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের তারা বলেন, ‘আমরা তোমাদের কথা শুনলাম। তোমাদের দাবি প্রশাসনের কাছে পৌঁছে দিবো।’
চার দফা দাবিগুলো হলো— নূরুল হকসহ সকল শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও আইনানুগ বিচার করতে হবে; শির্ক্ষাথীদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতার দায়ে প্রক্টরকে অপসারণ করতে হবে; ডাকসুতে হামলায় আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার প্রশাসনকে বহন করতে হবে, হামলায় আহতদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া হলে হলে দখলদারিত্ব, গেস্টরুম-গণরুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
এর আগে রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে চার দফা দাবি আদায়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন জোটের নেতারা। কর্মসূচিতে ছাত্র পরিষদ ছাড়াও বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন বলে জানা গেছে।
সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্যের পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর দেয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ডাকসু ভবনে নৃশংস হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুরসহ আহত শিক্ষার্থীদের নামে মামলা করা হয়েছে, যার বিরুদ্ধেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো বক্তব্য আমরা পাইনি। উপরন্ত আহতদেরকেই দোষারোপ করার চেষ্টা করা হয়েছে যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত।’
আরও বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্রমাগতভাবে সন্ত্রাসী হামলা বেড়ে চলছে। হামলাকারীরা বারবার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে সহিংসতা বেড়েই চলেছে, যার দায়ভার প্রশাসন কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। হলে আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রদানে হল প্রশাসন বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। সন্ত্রাসী-দখলদারদের কাছে জিম্মি সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অনেক ঘটনা প্রতিদিন ঘটে যা তারা প্রশাসনের কাছে প্রকাশ করার মতো নিশ্চয়তাও পায় না। সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের পক্ষ নিতে গিয়ে প্রতিটি ঘটনায় প্রক্টর শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।’
শিক্ষাঙ্গনের এমন দমবদ্ধ ও অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য অর্জনের জন্য একেবারেই অনুপযোগী উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ছাত্রদের মতপ্রকাশের অধিকার ভূলুণ্ঠিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখালেখির কারণে বেশ কিছু শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে।’
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ