স্পোর্টস ডেস্ক: বর্ণিল আয়োজনে পর্দা উঠেছে সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের। নেপালে অনুষ্ঠেয় এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এসএ গেমসের ১৩তম আসরের ২৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ২৫টিতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ।
সর্বশেষ ১৯৮৪ ও ১৯৯৯ সালে এই গেমসের আয়োজন করেছিল নেপাল। ১৯৮৪ সালে প্রথম ও ১৯৯৯ সালে অষ্টম আসরের আয়োজন করেছিল হিমালয় কন্যারা। এবার তৃতীয় বারের মত এসএ গেমসের আয়োজন করে তারা।
কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে বিকেল ৫টায় পর্দা উঠে ত্রয়োদশ এ আসরের। দশরথ রঙ্গশালায় প্রথমে প্রবেশ করেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি। এরপরই আসেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। আয়োজক কমিটি তাদেরকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এরপরেই শুরু হয় তিন মিনিটের লেজার শো। সাত দেশের ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণে মার্চপাস্ট পর্যবেক্ষণ করেন নেপালের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী। নেপাল অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট জীবন রাম শ্রেষ্ঠা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর ঘোষণা করেন। উদ্বোধনী ভাষণ দেন দেশটির ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের সদস্য সচিব রমেশ কুমার সিলওয়াল। উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া মন্ত্রী জগত বাহাদুর বিশ্বকর্তা সুনার। নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারীর উদ্বোধনী ভাষণের পরেই সাবেক চার তারকা অ্যাথলেট মশাল ব্যাটন নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন। সব শেষে মশাল প্রজ্বলন করে এসএ গেমসে আলো জ্বালান চারবারের সোনাজয়ী সাবেক তায়কোয়ান্ডোকা দীপক বিষ্ঠা। এরপর ক্রীড়াবিদদের পক্ষ থেকে শপথ বাক্য পাঠ করেন নেপালের তারকা ক্রিকেটার পরেশ খাড়কা এবং কোচদের পক্ষ থেকে রেফারি দীপক থাপা।
বিকেল ৫টায় কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ৩০ হাজার দর্শক একসাথে উপভোগ করেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বর্ণিল উদ্বোধনী আয়োজনে ছিল স্বাগত নৃত্য। ১২ মিনিট স্থায়ী প্রদর্শনীতে নেপালের সেনাবাহিনী, আর্মড পুলিশ ফোর্সেস ও নেপাল পুলিশের এক হাজার চৌকস সেনারা সাত দেশের নামের সঙ্গে মাঠেই সংশ্লিষ্ট দেশের মানচিত্র ফুটিয়ে তুলেন নিজেরা। নেপালের ঐতিহ্যবাহী নৃত্যও থাকে। যা ‘মাসকেলেস থিনিক’ নামে পরিচিত।
লোকাল অর্গানাইজিং কমিটির সদস্য সচিব রমেশ কুমার বলেন,‘আমরা এসএ গেমসের বর্ণিল উদ্বোধনের চেষ্টা করেছি। দিনের পর দিন তিন বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আয়োজন সাজাতে হয়েছে। গত কয়েকদিনে শত শত ছাত্র ছাত্রীদের অনুশীলনের উপর নজর রাখতে হয়েছে। আমাদের সংস্কৃতির কোন কিছুই যেন বাদ না পরে, সেদিকে নজর রেখেছি। তিন বাহিনীর চৌকস সদস্য ছাড়াও স্কুল ও কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা পারফর্ম করে প্রায় তিন ঘণ্টা ৪০ মিনিটের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।
মোদ্দাকথা একটি নির্মল বিনোদন দেয়ার চেষ্টা ছিল দর্শক এবং আগত ছয় দেশের ক্রীড়াবিদ ও কর্মকর্তাদের। আশাকরি সবার ভালো লেগেছে আমাদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।’ নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রায় বাইশ হাজার নিরাপত্তাকর্মী একযোগে কাজ করেছে।
ভারতের শিলং-গৌহাটিতে অনুষ্ঠিত এসএ গেমসের পদক জয়ের লড়াইয়ে গত আসরে ২৬৭২ জন ক্রীড়াবিদ অংশ নিয়েছিলেন। এবার সে সংখ্যাটা ছাড়িয়ে গেছে। সর্বমোট প্রায় ৩২৫০ জন থলেট অংশ নেবে এবার। ১ হাজার ১১৯টি পদকের জন্য লড়বেন ক্রীড়াবিদরা। তার মধ্যে স্বর্ণ ৩১৭টি, রৌপ্য ৩১৭টি ও ব্রোঞ্জ ৪৭৯টি। স্বাগতিক নেপালের ৬৪৮ জন এ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে এবার। বাংলাদেশ ৬২১ জন, ভারত থেকে এসেছে ৪৬৮ জন আর পাকিস্তান ৪১৩ জনের বহর নিয়ে পৌঁছে গেছে নেপালে। তবে সবচেয়ে বড় ৬২২ জনের দল নিয়ে এসেছে শ্রীলঙ্কা। এ ছাড়া মালদ্বীপ থেকে ৩৩২ আর ভুটান থেকে গেছে ১৪২ জন। -বাসস
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ