চল্লিশ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের মামলায় পুলিশের ডিআইজি (সাময়িক বরখাস্ত) মিজানুর রহমান ও দুদকের পরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ অভিযোগপত্রে অনুমোদন দেয়া হয়।
দুদক সূত্র জানিয়েছেন, পরস্পর যোগসাজশে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ হস্তান্তর করার অপরাধে দণ্ডবিধির ১৬১/১৬৫(ক)/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২)(৩) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করা হয়েছে। শিগগিরই তা বিচারিক আদালতে জমা দেওয়া হবে।
দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিআইজি মিজান গত বছর ১৫ জানুয়ারি প্রথম দফায় ২৫ লাখ এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দেন এনামুল বাছিরকে। দু’বারই রমনা পার্কে গিয়ে এনামুল বাছিরের হাতে টাকার ব্যাগ তুলে দেন ডিআইজি মিজান। লেনদেনের বিষয়টি তার বডিগার্ড হৃদয় হাসান ও অর্ডারলি মো. সাদ্দাম হোসেন জানত। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ঘটনা চাক্ষুষ দেখেছেন এবং দু’জনের কথোপকথন শুনেছেন। তাদের কথোপকথন পর্যালোচনায় দেখা যায়, এই টাকা ছাড়াও এনামুল বাছির তার ছেলেকে ঢাকার কাকরাইলে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল থেকে আনা-নেয়ার জন্য ডিআইজি মিজানের কাছ থেকে একটি গাড়িও দাবি করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ ফানাফিল্ল্যা তার প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করেন, তদন্তকালে বিশেষজ্ঞ মতামত, প্রত্যক্ষ সাক্ষীদের বক্তব্য, অডিও রেকর্ডে দু’জনের কথোপকথন ও পারিপাশ্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, ডিইইজি মিজান নিজে অভিযোগের দায় থেকে বাঁচার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে ঘুষের টাকা দিয়ে খন্দকার এনামুল বাছিরকে প্রভাবিত করেন। তিনি অবৈধভাবে দুদকের অনুসন্ধানকাজ ও কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করার জন্য অবৈধ পন্থার আশ্রয় নেন। আর এনামুল বাছির আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় নিজের দায়িত্বের প্রতি অবহেলা করে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে গ্রহণ করেন।
ফেসবুকের মাধ্যমে মতামত জানানঃ